মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:৫১ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
Welcome To Our Website...
শিরোনাম :
বিদ্যুতের কর্মচারীর বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগ; বেরিয়ে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য মাগুরায় আদালতের আদেশ অমান্য করে স্থাপনা ভেঙে দেওয়াল নির্মাণের অভিযোগ শ্রীপুরে এতিমখানা জামে মসজিদের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন শ্রীপুরে আদালতের আদেশ অমান্য করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ শ্রীপুরে দলীয় ব্যানারে সরকারি খাল দখল চট্টগ্রামে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা মাগুরায় ন্যাশনাল পিপলস পার্টি’র আহ্বায়ক কমিটি গঠন লক্ষ্মীপুরে বিলুপ্তির পথে ‘ভেসাল জাল’ সাংবাদিক ফরিদ ও সাংবাদিক মনজুর মা আর নেই, সর্বস্তরে শোকের ছায়া বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাংচুরকারীদের রেহাই নেই: কাউন্সিলর জসিমের হুঁশিয়ারি

লক্ষ্মীপুরে বিলুপ্তির পথে ‘ভেসাল জাল’

মাহমুদুর রহমান মনজু, লক্ষ্মীপুর
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৯ জুলাই, ২০২৩
  • ৩৬ বার পঠিত

ভেসাল জাল কোথাও কোথাও ‘গভীর জাল’ নামেও পরিচিত , যদিও এটিকে হাত জাল বলেও ডাকা হয়। ভেসাল জাল বানাতে বাঁশ ও জাল তৈরির উপযোগী শক্ত সুতা ব্যবহৃত হয়। সাধারণত ত্রিভুজাকৃতির একটি লম্বা বাঁশের ফ্রেম থাকে। এ ফ্রেম জুড়ে জাল সংযুক্ত করা হয়।

গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যের মধ্যে ভেসাল জাল দিয়ে মাছ শিকারের এই অপরুপ দৃশ্যটি মনোমুগ্ধকর চিরচেনা। লক্ষ্মীপুর জেলায় এখন আর আগের মত ভেসাল জাল (বেয়াল) নেই বললে চলে।  কালের বিবর্তনে আধুনিকতার ছোঁয়ায় এ ভেসাল জালে মাছ শিকারের দৃশ্য এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। ‘ভেসাল জাল’ পুস্তকের কথা হলেও স্থানীয় গ্রামের ভাষায় এটি বেয়াল জাল, খেয়া জাল নামে মানুষের কাছে অতি পরিচিত।

এটি এমন একটি মাছ ধরার পদ্ধতি, যা পানির একটি নির্দিষ্ট গভীরতা পর্যন্ত ডুবিয়ে দেওয়া হয়। তারপর মাছ প্রবেশ করলে উত্তোলন করে মাছ ধরা হয়। ভেসাল জালগুলো অনেক সমতল বা থলে আকৃতির, আয়তক্ষেত্র, পিরামিড বা থলির মতো হতে পারে। এ জাল জেলে তার হাত এবং পা দিয়ে পরিচালনা করে। এটি কখনো নির্দিষ্ট স্থানে বসিয়ে কিংবা নৌকা দিয়েও পরিচালনা করা যায়।

বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে যখন গ্রামের খাল-বিল, নদী-নালা বৃষ্টি বা বন্যার পানিতে ভরে উঠে ঠিক তখন মৎস্য শিকারিরা এ জাল দিয়ে মাছ শিকার করে থাকে । তবে বর্তমানে পূর্বের সেই চিরচেনা দৃশ্য সচরাচর চোখে দেখা যায় না।

মাছ শিকারের দারুণ এ কৌশল বেশি চোখে পড়ে গ্রামাঞ্চলে। তবে উপকূলবর্তী এলাকায় জলবায়ুর পরিবর্তনে সৃষ্ট নদীভাঙনের কারণে অনেক খাল-নদী-নালা হারিয়ে যাওয়ার কারণে ভেসাল জাল দিয়ে মাছ ধরার সংখ্যাটাও দিনে দিনে কমে যাচ্ছে।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পার্বতীনগর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের জেলে মনা দাস এবং তার ছেলে স্বপন দাস বলেন, “এক সময় আমরা এবং আমাদের এলাকার জেলে সম্প্রদায় রহমতখালী খাল, কৌরালিয়া খাল, রায়পুর দাড়া খাল, ছাগল ছেড়া খাল, ওয়াবদা খালসহ আরো অনেকে খালে – বিলে ,ভেসাল জাল পেতে মাছ ধরতাম। আবার বারাসিয়া নদীর মাঝে সারি সারি ভেসাল জাল স্থাপনের মধ্যদিয়ে বহু জেলে সম্প্রদায় মানুষ মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তবে এখন খাল বিল নদী ভরাট হয়ে যাওয়া ভেসাল জাল স্থাপনের স্থান না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে জেলেরা। তাই আমরা জীবন বাঁচানোর তাগিদে
অন্য পন্থা অবলম্বন করে মাছ শিকার করছি।”

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাছ ধরার এই অভিনব কৌশল নদীতে ব্যবহার করলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মৎস্যসম্পদ। বিভিন্ন বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির মাছও আটকা পড়ে এই জালে। মাছের রেণুও এই জালে ধরা পরায় মাছের প্রজনন ক্ষেত্রে বিঘ্ন ঘটে।

লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেন, মৎস্য সংরক্ষণ আইন ১৯৫০-এ বলা হয়েছে, চাষের উদ্দেশ্য ব্যতীত কেউ প্রতিবছর জুলাই থেকে ডিসেম্বর (আষাঢ় মাসের মাঝামাঝি থেকে পৌষ মাসের মাঝামাঝি) পর্যন্ত ২৩ সেন্টিমিটারের (৯ ইঞ্চি) নিচে থাকা কাতলা, রুই, মৃগেল, কালবাউশ, ঘনিয়াসহ দেশি প্রজাতির মাছ নিধন করতে পারবে না। চাষের উদ্দেশ্যে মাছ ধরতেও জেলা মৎস্য কর্মকর্তার দপ্তর থেকে অনুমতি নিতে হবে। অন্যদিকে, মাছ ধরার ক্ষেত্রে ৪ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার বা তার চেয়ে কম ফাঁসবিশিষ্ট জাল ব্যবহার করা যাবে না। আইন অমান্য করলে এক মাস থেকে সর্বোচ্চ এক/২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রয়েছে ।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By Deshjog TV