শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:০৩ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
Welcome To Our Website...
শিরোনাম :
পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সাবেক ছাত্র নেতা মিজানুর রহমান মাগুরাবাসিকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কাজী রফিকুল ইসলাম মাগুরাবাসিকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মাগুরা জেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক আলী আহম্মদ পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মাগুরা জেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক সাকিব পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন শরিয়ত উল্লাহ বঙ্গবন্ধু ল’টেম্পল কলেজের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল প্রাথমিক শিক্ষকদের অনলাইন বদলি আবেদন শুরু শনিবার চট্টগ্রামে ১০ জুয়াড়ি গ্রেফতার চট্টগ্রামে চোরাই সিএনজিসহ গ্রেপ্তার ২ চট্টগ্রামে চোলাই মদসহ গ্রেপ্তার ৪

কুকুর কেন মানুষকে কামড়ায়?

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ৩৯৯ বার পঠিত

কুকুরের কামড়ে মানুষের আহত হওয়ার ঘটনা একেবারে অপরিচিত কোনো ঘটনা নয়। শহর থেকে গ্রামে, অহরহই এমন ঘটনার কথা শোনা যায়।  

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতি বছর প্রায় ৫৫ হাজার মানুষ কুকুরের কামড়ের পরে জলাতঙ্কের কারণে মারা যায়।

এশিয়া ও আফ্রিকায় কুকুরের কামড়ের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ভারতে জলাতঙ্ক এবং এর কারণে মারা যাওয়াদের প্রায় ৩০ থেকে ৬০ শতাংশের বয়স ১৫ বছরের কম।

কিন্তু প্রশ্ন হলো কুকুর কামড়ায় কেন? অজয় সুদ নামে একজন ভারতীয় পশু চিকিৎসক বলছেন, কুকুরের কামড়ের বেশির ভাগ ঘটনাই এলাকা ও নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত।

তিনি বলেন, প্রতিটি কুকুরই তার এলাকা নির্ধারণ করে। এখন একদিকে যেমন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে কুকুরের সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের এলাকা কমতে শুরু করেছে। এখন যখন তাদের পক্ষে সেই অঞ্চলটি রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে, তখন কুকুরগুলো নিজেদের অনিরাপদ বোধ করতে শুরু করে। তারা মনে করে মানুষ তাদের এলাকায় ঢুকে পড়ছে। ফলে সে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে।

তিনি আরও বলছেন, অনেক সময় কুকুর ভয় দেখানোকে খেলা মনে করে। ধরুন, কেউ যদি কুকুরকে ভয় পেয়ে দৌড় দেয় তখন কুকুরটি বুঝে ফেলে মানুষ তাকে ভয় পাচ্ছে, তখন সে এটাকে একটা খেলা হিসাবে দেখতে শুরু করে। এই খেলতে খেলতেই কখনও কখনও আবার কামড়েও বসে।

বেওয়ারিশ কুকুরদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা, খাবারের অভাব, গাড়ির শব্দ, হঠাৎ আলোর ঝলকানি তাদের প্রভাবিত করে। এ ধরনের পরিস্থিতি তাদের আক্রমণাত্মক করে তোলে।

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় পোষা কুকুরও মানুষকে কামড়ায়। কিন্তু কেন? এই পশু চিকিৎসকের জবাব, কুকুরগুলোকে যারা পোষে তারাই তাদের স্বভাব নষ্ট করে।

‘দুই-তিন মাস বয়সী কুকুরছানাটি দাঁত দিয়ে যখন সব কিছু ধরে ফেলে, তখন সেটা বন্ধ না করে মানুষ তার সাথে এটা নিয়ে খেলা করে। পরে এটা তার অভ্যাসে পরিণত হয়। কিন্তু এই বয়সেই কুকুরটাকে এসব বিষয়ে শেখানোর উপযুক্ত সময়।’

তিনি আরও বলেন, এছাড়া অনেকে কুকুর বাড়ির এক কোণে বেঁধে রাখেন। এতে কুকুরটি বেশি মানুষের সাথে মেশার সুযোগ পায় না, সে নিজেকে অনিরাপদ বোধ করতে থাকে। এবং তখন এটা সম্ভব যে সে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে কামড় দিতে পারে।

এছাড়া কুকুরদের আগ্রাসী হওয়ার পেছনে খাবার ও পানীয়ের ভারসাম্যহীনতার একটা বড় কারণ রয়েছে।

অনেক সময় বাড়ির কুকুরকে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাবার দেওয়া হয়। দেখা যায়, যে পরিমাণ খাবার তাদের দেওয়া হয় সে পরিমাণে শারীরিক পরিশ্রম তাদের হয় না। অলস এই পড়ে থাকাও কুকুরদের আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠার একটা কারণ হতে পারে।

বেওয়ারিশ কুকুর বেশি বিপজ্জনক নাকি পোষা কুকুর? এ প্রশ্নের যে জবাব পাওয়া যায় তা হলো- এটা নির্ভর করে জাতের ওপর। যদি হাইপার জাতের  কুকুর হয়ে থাকে, তবে সে অবশ্যই বেশি আক্রমনাত্মক হবে। হাইপার জাতের কুকুরের মেজাজ কখন বদলাবে তা বোঝা মুশকিল। তাকে ভুল জায়গায় স্পর্শ করলেও সে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে।

পোষা কুকুর এবং রাস্তার কুকুরের কামড়ের পার্থক্য কী?
পোষা কুকুরের কামড় এবং রাস্তার কুকুরের কামড়ের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। যখন একটি পোষা কুকুর কামড়ায়, তখন কামড়ানোর পর সে পিছিয়ে আসে।

পোষা কুকুরগুলো সাধারণত বুঝতে পারে যে তারা ভুল করেছে। তাই কাউকে কামড়ানোর পর তারা পিছু হটে যায়। আর বেওয়ারিশ বা রাস্তার কুকুরের মধ্যে শিকারির মতো একটা আচরণ দেখা যায়। তার প্রবৃত্তিতে ভিন্নতা দেখা যায়।

পোষা কুকুরদের সাধারণত টিকাও দেওয়া থাকে। অন্যদিকে বেওয়ারিশ কুকুরদের টিকা না দেওয়া থাকার কারণে তাদের কামড়ে জলাতঙ্কের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।

প্রায়ই বলা হয়ে থাকে, পাগলা কুকুর কামড়ালে চার দিন কুকুরটার ওপর নজর রাখতে হবে, যদি সে বেঁচে থাকে তবে ঠিক আছে, কিন্তু যদি সে মারা যায় তবে এটি বিপদের বিষয়।

এ বিষয়ে পশু চিকিৎসক অজয় সুদ বলছেন, সাধারণত একটি কুকুর জলাতঙ্কে সংক্রমমিত হওয়ার চার থেকে দশ দিনের মধ্যে মারা যায়। একটি পথকুকুর যদি কোনো মানুষকে কামড় দেয় তখন ধরে নেওয়া হয় যে কুকুরটি ওইদিনই জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়েছে এবং মূলত এ কারণে তার দিকে নজর রাখতে বলা হয়। এরপর কয়েকদিনের মধ্যে কুকুরটি যদি মারা যায় তবে এটা এক ধরনের ইঙ্গিত যে আপনার এখন ইনজেকশন নিতেই হবে।

জলাতঙ্কও দুই প্রকার। এক ধরনে দেখা যায় জলাতঙ্কে কুকুরের শরীরের স্নায়ু দুর্বল হতে থাকে, সে ঝিমাতে তাকে। তারপর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে চার দিনের মধ্যে মারা যায়। আর আরেক প্রকারে দেখা যায় কুকুরটি মারা যেতে দশ দিন সময় লাগে এবং এই সময়ে এটি খুব আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। যদি সে তার লালা গিলতে অক্ষম হয় তবে তার লালা ঝরতে থাকে। তার গলার শিরাগুলো অবশ হতে শুরু করে। এতে সে ভয় পেতে শুরু করে আর মানুষকে কামড়াতে শুরু করে।

কুকুর কামড়ালে বেশির ভাগ মানুষই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন জলাতঙ্ক নিয়ে। চিকিৎসকদের পরামর্শ ক্ষতস্থানে রক্তপাত বন্ধ হওয়ার পরপরই ন্যূনতম দশ মিনিট ধরে পানি দিয়ে ক্ষত পরিষ্কার করতে হবে। সম্ভব হলে কোনো অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবানও ব্যবহার করা যেতে পারে।

তবে মনে রাখতে হবে সাধারণত পোষা কুকুরদের টিকা দেওয়া হয়, তাই জলাতঙ্কের ঝুঁকি থাকে না। সেক্ষেত্রে এটাকে স্রেফ সাধারণ ক্ষত হিসাবে ধরা যেতে পারে। তবে বেওয়ারিশ কুকুর হলে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। আক্রমণের কিছুদিনের মধ্যে কুকুরটি মারা গেলে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে আর অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By Bangla Webs