শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:০২ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
Welcome To Our Website...

পুরোদমে স্কুল শুরুর পর রাজধানীতে পুরোদমে যানজট

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৬ মার্চ, ২০২২
  • ৩৯১ বার পঠিত

সব পর্যায়ের স্কুলে পুরোদমে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হবার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীতেও পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে যানজট। স্কুল কার্যক্রম স্বাভাবিক হবার প্রভাব পড়ছে নগরীর সড়কে। যানবাহনের চাপ বেড়ে গেছে বহু গুণ। ফলে ছোট-বড় সব সড়কেই রয়েছে তীব্র যানজট।

বুধবার সকাল থেকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, সড়কের মোড়, বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এলাকা থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লাতেও তীব্র যানজট দেখা গেছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শহরের সব এলাকা থেকে তীব্র থেকে মাঝারি যানজটের খবর আসছিলো।

বসন্ত সকালের রোদ আর গরমে অসহনীয় যানজটে নাকাল হচ্ছিলেন নগরবাসী। বিশেষ করে কর্মজীবী মানুষ আর শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি ছিলো চরমে। গণপরিবহন থেকে নেমে পায়ে হেঁটে অফিসের পথে রওনা হতে দেখা গেছে অনেককে।

রাজধানীর সবকটি মূল সড়কেই দেখা দিয়েছে যানজট। বিশেষ করে নতুন বাজার থেকে রামপুরা ও মালিবাগ, শাহবাগ, ফার্মগেট, মোহাম্মদপুর থেকে ধানমন্ডি ২৭ এবং মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে তেজগাঁও সাত রাস্তা এলাকায় যানজট বেশি দেখা গেছে।

সকালে অফিস ও স্কুল শুরুর সময়ে যানবহানের চাপ বেশি বেড়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পাশাপাশি, মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজের কারণেও যানবাহনের ধীরগতি বেড়েছে। এছাড়া নগরীর অনেক এলাকায় রাস্তা খোড়াখুড়ির কাজের কারণেও বেড়েছে যানজট।

মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ বলছে, আগের দিনের তুলনায় বুধবার সকাল থেকেই সড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে। রোদের তাপ আর যানবাহনের প্রচণ্ড চাপ। এর মধ্যেও ট্রাফিক কার্যক্রম চলছে। তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন যানজট নিয়ন্ত্রণে, যাতে কিছুটা হলেও ভোগান্তি কমে মানুষের।

আগের দিনও প্রায় একই চিত্র দেখা গেছে রাজধানীতে। সকালে স্কুল আর অফিসগামীতে স্রোত। দুপুরে স্কুল থেকে শিক্ষার্থীদের বাড়ি ফেরা। দুপুর গড়িয়ে বিকেলও সড়কে যানজট দেখা গেছে। তবে অফিস ছুটির পর সড়কের অবস্থা আরও নাকাল হয়ে উঠে।

আজও প্রায় একই চিত্র। সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানবাহন অনেকটা থেমে থেমে চলছে। যাত্রী ও পথচারীদের চলাচলও বেড়েছে। বনানী, মহাখালী, বিজয় সরণি, কারওয়ান বাজার, সাতরাস্তা, মগবাজার, রমনা, মালিবাগ রামপুরা, বাড্ডা, গুলশান এলাকায় যানবাহনের প্রচণ্ড চাপ রয়েছে।

নগরীতে তীব্র যানজটে সবচেয়ে বড় মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে গণপরিবহন। বাসগুলো অনেকটা বাকা হয়ে সড়কে দাঁড়িয়ে থেকে যাত্রী তোলা ও নামানোর কারণেও কৃত্তিম যানজটের সৃষ্টি হতে দেখা গেছে। কিছুতেই এসব পরিবহনকে শৃংখলা ফেরানো যাচ্ছে না।

ট্রাফিক পুলিশ বলছে, বাস চালকরা সড়কে নিয়ম মেনে চলে না। তারা যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছে আবার নামাচ্ছে। এতেও জটলা তৈরি হচ্ছে। গণপরিবহন মালিকদের বারবার বলার পরও এমন দৃশ্যপটের কোন পরিবর্তন হয়নি বলেও জানান, তারা।

আর, যাত্রীদের আক্ষেপ, সকালে যথেষ্ট সময় নিয়ে বাসা থেকে বের হতে হয়। এরপরও যানজটে দীর্ঘসময় আটকা থাকতে হয়। যে পথেই যাই সেখানেই যানজটে পড়তে হয়। অনেক সময় বাধ্য হয়েই গণপরিহন থেকে নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের পথ ধরতে হয়।

পরিবহন চালকরা বলছেন, সড়কে যে পরিমাণ যানবাহন বেড়েছে সেই তুলনায় নগরীতে রাস্তা নেই। সেই সঙ্গে নগরীর এক মাথা থেকে অন্য মাথা পর্যন্ত মেট্রোরেলের কাজ চলায় রাস্তার আরো সরু হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে অনেক রাস্তায় খোঁড়াখুড়ি।

তারা জানান, পরিস্থিতি এমন যে, গণপরিবহন চলার মতো কোন পরিবেশ নেই। কিন্তু পেটে দায় তারা স্টিয়ারিং ধরেছেন। এক দিকে গাড়ির ইঞ্জিনের তাপ অন্যদিকে রোদের তাপ, যানজট তো আছেই। গাড়ি চালাতে মন চায় না বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকে।

গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ শামসুল হক বলেন, যানজটের জন্য অনিয়ন্ত্রিত ছোট ছোট যানকেও দায়ী করা যায়। সড়কের ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যানবাহন রেজিস্ট্রেশন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে নতুন আপদ হয়েছে মোটরসাইকেল। এখনই উচিত এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে করা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক গবেষণায় দেখা গেছে, সড়কে পিক টাইমে চলাচল করা যানবাহনের গড় গতি ছিলো ঘণ্টায় সাড়ে ছয় কিলোমিটার। চলতি বছরে এই গতি নেমে এসেছে প্রায় চার দশমিক আট কিলোমিটারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed By Deshjog TV