রাজশাহীর বাঘায় টাকা চুরির অভিযোগে মাদ্রাসাছাত্রকে পেটানো সেই শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শিক্ষকের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে ছাত্র জুবাইর হোসেনকে পিটিয়ে আহত করেন মাদ্রাসা শিক্ষক। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় ছাত্রের পিতা জিল্লুর রহমান বাদী হয়ে বুধবার বিকালে বাঘা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
জানা যায়, উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের তুলসিপুর (সোদপুর) গ্রামে আল কারীম হিফ্জুল কুরআন মাদ্রাসা ও ইসলামি কিন্ডার গার্ডেনের মক্তব শ্রেণির ছাত্র জুবাইর হোসেন (১১)। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তাকে এ মাদ্রাসায় ভর্তি করা হয়। তার পর থেকে সে নিয়মিত লেখাপড়া করে যাচ্ছে এ মাদ্রাসায়। এর মধ্যে মঙ্গলবার মাদ্রাসার টাকা চুরি হয়। এতে তাকে সন্দেহ করে তল্লাশি করা হলে তার কাছে কিছু টাকা পাওয়া যায়।
আরও জানা যায়, মাদ্রাসার শিক্ষক এ ঘটনায় ছাত্রকে বেত দিয়ে পিটিয়ে মাদ্রাসায় আটকে রাখে। পরে বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানতে পেরে বুধবার দুপুরে মাদ্রাসা থেকে আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় তার বাবা জিল্লুর রহমান বাদী হয়ে বিকালে মাদ্রাসার পরিচালক ও শিক্ষক মেজবা ওয়াদুদ শাহরিয়ার ডলারকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি অভিযোগ করেন। পরে পুলিশ রাতে তুলসিপুর (সোদপুর) গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।
এ বিষয়ে ছাত্রের বাবা জিল্লুর রহমান বলেন, আমার ছেলে মনিগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত। দীর্ঘদিন করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় মাদ্রাসায় ভর্তি করি। আমার ছেলে একজন সৎ ও সহজ-সরল। তাকে কোনো কারণ ছাড়াই চুরির অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে আটকে রাখে মাদ্রাসার শিক্ষক। পরে তাকে উদ্ধার করে মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসাধীন ছেলের পাশে বসে মা শরিফা বেগম ছেলের অবস্থা দেখে শুধু কেঁদেই যাচ্ছেন। তিনি কোনো কথা বলতে পারছিল না।
এ বিষয়ে তুলসিপুর (সোদপুর) গ্রামে আল কারীম হিফ্জুল কুরআন মাদ্রাসা ও ইসলামি কিন্ডার গার্ডেনের পরিচালক ও শিক্ষক মেজবা ওয়াদুদ শাহরিয়ার ডলার বলেন, মাদ্রাসার পাশে সেন্টুর মুদি দোকানে এর আগে চুরি হয়। এতে সন্দেহ করা হয় ওই ছাত্রকে। এ ছাড়া মাদ্রাসার ছাত্রদের মাঝে মধ্যে টাকা চুরি হয়। বিষয়টি নিয়ে ছাত্র জুবাইর হোসেনকে সন্দেহ করে তার ব্যাগ তল্লাশি করা হলে ২২০ টাকা পাওয়া যায়। তার পর তাকে শাসন করা হয়েছে।
বাঘা থানার উপপুলিশ পরিদর্শক (এসআই) তৈয়ব আলী বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পরিপ্রেক্ষিতে মাদ্রাসার শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।