সাত বছর আগে দেশ ছেড়ে ফ্রান্সে পাড়ি জমিয়েছে চুরির মামলার আসামি নাসির হোসেন (৫০)। ফ্রান্সে বসেই বাংলাদেশে ছিনতাই চক্র পরিচালনা করেন তিনি। চক্রেরের অন্য সদস্য শামীমের মাধ্যমে পরিকল্পনা। এরপর চুরির জন্য টাকার জোগানও দেয় সে। চক্রের প্রত্যেক সদস্যের আলাদা-আলাদা দায়িত্ব নির্ধারণ করে এবং শামীমের তদারকিতে চুরির ঘটনা সংঘটিত হয়।
সবশেষ পূর্ব পরিকল্পনা করে নাইটগার্ড ও সুইপার নিয়োগের নামে চোর চক্রের দুই সদস্যকে কচুক্ষেত রজনীগন্ধা টাওয়ারে রাঙ্গাপরী মার্কেটে পাঠায়। এরপরই জুয়েলার্সের দোকানের তালা ভেঙে মালামাল চুরি করে পালিয়ে যায় চক্রের সদস্যরা। এ ঘটনায় বাংলাদেশে থাকা ছিনতাই চক্রের মূল সমন্বয়কারী মঞ্জুরুল হাসান শামীমকে গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার।
কচুক্ষেত এলাকার রজনীগন্ধা কমপ্লেক্সে গত ৫ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে রাঙাপরী জুয়েলার্স নামের দোকানের শাটার কেটে ৩০২ ভরি স্বর্ণ এবং নগদ টাকা চুরি হয়। ঘটনার পরেই তদন্তে নামে গোয়েন্দা পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজে দেখে শনাক্ত হয় অপরাধী। গাজীপুর থেকে চোরাইকৃত স্বর্ণ বিক্রির টাকা ও বাকি স্বর্ণসহ আটক করা হয় মূল সমন্বয়কারী শামীমকে। জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে মহাপরিকল্পনার তথ্য। মার্কেটে স্টোর ভাড়ার নামে পরিকল্পিতভাবে মজুত করা হয় চুরির কাজে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। শুধু তাই নয়, পরিচয় গোপন করে এ চক্রের দুই সদস্যকে চাকরি দেয়া হয় মার্কেটে নিরাপত্তা প্রহরী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, পরিকল্পিতভাবে বাসা ভাড়া নেয়া, নিয়োগ করাসহ সবকিছুই শামীম করত। এদের প্রবাস থেকে আর্থিক সাহায্য করত ফ্রান্স প্রবাসী নাসির।
গ্রেপ্তার শামীম জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশকে জানিয়েছে, চক্রের দুই সদস্য মাসুদ এবং ইলিয়াস মিথ্যা নামপরিচয় ব্যবহার করে কচুক্ষেত রজনীগন্ধা টাওয়ারে সিকিউরিটি গার্ড ও সুইপারের চাকরি নেয়।
চাকরিতে থাকা অবস্থায় তারা ওই দোকানে চুরির পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করার জন্য চক্রের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করতে থাকে।
মার্কেটে নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগে যথাযথ পুলিশ ভেরিফিকেশন বাধ্যতামূলক করা উচিত বলে মনে করেন ডিবির এ কর্মকর্তা।