স্বামী মারা যাওয়ার পর চট্টগ্রামের বাসিন্দা বানু বেগম বরিশালে চলে গিয়েছিলেন মেয়ের কাছে। সেখানে এতোদিন মেয়ে ও জামাতার সঙ্গে থাকলেও নিঃসঙ্গ জীবন কাটাতেন তিনি। জীবন চলে তার অন্যের বাড়িতে কাজ করে। এমন অবস্থায় তিনি বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ৫৪ বছর বয়সী বানু বেগমের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ৬২ বছর বয়সী আশরাফ আলী বেপারীর। প্রেমের এই সম্পর্ক একসময় গড়াতে থাকে বিয়ের দিকে। অবশেষে দুই পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হল।
শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার চাখার ইউনিয়নের সোনাহার গ্রামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পে জমকালো আয়োজনে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এক হাজার মানুষের উপস্থিতিতে এক লাখ এক টাকা দেনমোহরে বানু বেগমকে বিয়ে করেন আশরাফ আলী।
আশরাফ আলী বেপারীর বয়স ৬২ বছর। বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার চাখার ইউনিয়নে আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘরে তার বাস। স্ত্রী-সন্তান কেউ নেই। ভিক্ষা করে জীবন চলে। এই বয়সে এসে প্রেমে পড়েন ৫৪ বছরের বিধবা বানু বেগমের। তারও এক মেয়ে ছাড়া কেউ নেই। একাকিত্ব ঘোচাতে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন তারা।
সোনাহার গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা জানান, বিধবা বানু বেগমের এক কন্যা সন্তান থাকলেও, বৃদ্ধ আশরাফ আলীর কেউ ছিল না। তিনি আগে বিয়ে করেননি। একাকিত্বের জীবনে একে-অপরকে সঙ্গী হিসেবে বেছে নেন তারা। বিয়েতে এক লাখ এক টাকা দেনমোহর ধার্য করা হয়। আশরাফ আলী নগদ ৫০ হাজার টাকা দেনমোহর পরিশোধ করেছেন। বিয়েতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ও পার্শ্ববর্তী গ্রামের প্রায় এক হাজার মানুষের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মজিবুল ইসলাম টুকু বলেন, সোনাহার গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা আশরাফ আলী বিয়ে করেননি। তার কোনও সংসার নেই। ভিক্ষা করে চলেন। বৃদ্ধ বয়সে একাকিত্ব জীবন কাটাতেন। পরে এই নিঃসঙ্গতা ঘোচাতে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন।
এক সময় বানারীপাড়া সদর ইউনিয়নের জম্বদ্বীপ গ্রামে আশরাফ আলীর বাড়ি ছিল। নদীগর্ভে সব বিলীন হয়ে গেছে। পরে তার ঠিকানা হয় সোনাহার গ্রামের আশ্রয়ণে। সেখানে দুই শতক জমিসহ পেয়েছেন পাকা ঘর।