বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের খুঁটি থেকে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়া গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগে বদলী করা হয়েছে তড়িৎবিদ বেলাল উদ্দিন চৌধুরীকে। গত ৩১ আগস্ট চট্টগ্রামের মাদারবাড়ি বিদ্যুৎ অফিস থেকে তাকে পটিয়ায় বদলি করা হয়। এর মাধ্যমে প্রায় ১২ বছরের কর্মস্থল থেকে বিদায় নিতে হল তাকে।
তবে এখনো বহাল তবিয়তে রয়ে গেছেন মূল অভিযুক্ত সাহায্যকারী মাহমুদুল হাসান পলাশ। অথচ অবৈধ গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতিমাসে মোটা অংকের টাকা আদায় করতেন তিনি। তবে তার গ্রুপ লিডার বেলাল উদ্দিনকে বদলি করায় কিছুটা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।
কিন্তু বেলাল উদ্দিন চৌধুরী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলায় আওয়ামীলীগের প্রভাব দেখিয়ে গ্রাহকদের বাসায় গিয়ে হুমকি দিয়েছেন তাদের, এমনকি বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে তার পক্ষে কথা বলার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন বলেও অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
গ্রাহকদের বাসায় যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও হুমকি দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বেলাল উদ্দিন চৌধুরী।
বেলাল উদ্দিন চৌধুরী গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টিও অস্বীকার করে বলেন, অবৈধ সংযোগ ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে পলাশ গোপনে টাকা নিলে সেটির দায়ভার তার উপর বর্তায় না। তিনি দোষী হয়ে থাকলে তার গ্রুপের অন্য সদস্যরা, এমনকি উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও সমানভাবে দোষী।
সাহায্যকারী পলাশ বিভিন্ন ধরণের মাদক সেবনের সাথে জড়িত বলেও চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করেছেন তড়িৎবিদ বেলাল উদ্দিন। তিনি বলেন, উপর মহলের তদবিরের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা নেয়ার পরও বহাল তবিয়তে আছে পলাশ।
মাদকাসক্ত অবস্থায় জনসেবামূলক একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে কিভাবে দায়িত্ব পালন করছেন পলাশ। এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে পলাশের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অফিসে গিয়ে সরাসরি দেখা করার পরামর্শ দেন।
অবৈধ সংযোগের বিনিময়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মাদারবাড়ি জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যে বেলাল উদ্দিনকে বদলি করা হয়েছে। আর পলাশ অসুস্থ থাকায় এখনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশকে অসুস্থ দাবি করলেও নিয়মিত অফিসে এসে দায়িত্ব পালন করছেন পলাশ। অফিসসূত্র বলছে, অবৈধভাবে টাকা নেয়ার অভিযোগটি ওঠার পর অসুস্থতার কথা বলে জুলাই মাসের ১২ তারিখ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত ছুটিতে ছিলেন পলাশ।
এর আগে গত জুলাইয়ের ১০ তারিখ নগরীর আইস ফ্যাক্টরী রোডের রেলওয়ে কলোনীতে বিদ্যুতের খুঁটি থেকে অবৈধভাবে লাইন নিয়ে ব্যবহার করার অভিযোগে ৫ জন গ্রাহককে ৭ লাখ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমান আদালত। ওই সময় গ্রাহকরা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে অভিযোগ করেছিল বিদ্যুৎ অফিসের সাহায্যকারী পলাশ অবৈধ লাইনের বিনিময়ে প্রতিমাসে বিল নিয়ে যেত। এরপর বিষয়টি নিয়ে ভিডিও প্রতিবেদন প্রচার করে দেশযোগ টিভি।
ভিডিও প্রতিবেদন দেখুন:
ফেসবুক লিংক: https://fb.watch/n7Vq1K6eGX/