নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের সূত্রপাতের সঙ্গে ঢাকা কলেজের তিন ছাত্রলীগ কর্মীর সরাসরি সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে।
নিউ মার্কেটের দুটি ফাস্টফুডের দোকানে সোমবার ইফতারের আগে টেবিল পাতা নিয়ে দুই কর্মচারীর বাগ্বিতণ্ডা হয়। এর জেরে এক কর্মচারীর ডাকে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের তিন কর্মীর নেতৃত্বে কিছু ছাত্র ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তবে তারা মারধরের শিকার হয়ে কলেজে খবর দিলে ছাত্ররা মার্কেটে হামলা চালান।
নিউমার্কেট এলাকায় সোমবার মধ্যরাত থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তির পর মারা গেছেন একটি কুরিয়ার সার্ভিসের ডেলিভারিম্যান নাহিদ।
সংঘর্ষের নেপথ্যের কারণ সম্পর্কে শুরুতে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাচ্ছিল না। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ করে। তবে মঙ্গলবার নিউজবাংলার অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের চাঁদাবাজি বা খাবারের দোকানে কম মূল্য পরিশোধ নয়, বরং নিউ মার্কেটের দুটি ফাস্টফুডের দোকানের কর্মচারীদের নিজেদের বিবাদ থেকে সংঘাতের শুরু। এ বিবাদে একপক্ষকে শায়েস্তা করতে অন্যপক্ষ ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ডেকে আনে। পরবর্তী সময়ে এটিই ব্যবসায়ী বনাম শিক্ষার্থী সংঘর্ষে রূপ নেয়।
নিউ মার্কেটের একাধিক ব্যবসায়ী নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন, সোমবার ইফতারের সময় টেবিল পাতা নিয়ে নিউ মার্কেটের ৪ নম্বর গেটের ওয়েলকাম ফাস্টফুডের কর্মচারী বাপ্পীর সঙ্গে অন্য ফাস্টফুড দোকান ক্যাপিটালের কর্মচারী কাওসারের বাগ্বিতণ্ডা হয়।
এর জেরে বাপ্পী ও তার সহকর্মী সজীবের ডাকে ক্যাপিটাল ফাস্টফুডের কর্মীদের শায়েস্তা করতে ছুটে আসেন ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের তিন কর্মী ব্যবস্থাপনা বিভাগের নাসিম, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের লিটন ও পদার্থবিদ্যা বিভাগের আবদুল্লাহ আল মাসউদ।
এই তিনজনের নেতৃত্বে ঢাকা কলেজের কিছু শিক্ষার্থী ক্যাপিটাল ফাস্টফুডের কর্মীদের মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে ক্যাপিটাল ফাস্টফুডের কর্মীরা নিজেদের দোকানের ছুরি, চাকু নিয়ে পাল্টা হামলা চালান।
এরপর আহত হয়ে পালিয়ে যায় ঢাকা কলেজ থেকে আসা দলটি। তবে তারা পরে কলেজের আরও ছাত্রদের নিয়ে এসে নিউ মার্কেটে ফের হামলা চালায়।
ক্যাপিটাল ফাস্টফুডের কর্মী কাওসার ও ওয়েলকাম ফাস্টফুডের কর্মী বাপ্পীর বাসা রাজধানীর রায়েরবাজার এলাকায়। তবে ঘটনার পর থেকে তাদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না, দুজনের মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে।